পাভেল ইসলাম রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর কাটাখালি থানাধীন শ্যামপুর এলাকায় বাসা বাড়ি বা বন্ধ দোকানেই তৈরি হচ্ছে নামি-দামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী সামগ্রী।
আর এ সকল তৈরীর মূলহোতা হচ্ছে আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যাক্তি।
বিদেশি ব্রান্ডের কৌটা ও লেবেল হুবহু নকল করে এসব পণ্য তৈরী করে বিক্রি করছে রাজশাহী নগরী সহ দেশের বিভিন্ন বাজার, মার্কেট ও এলাকার দোকান গুলোতে।
দামি দামি কম্পানীর লেবেল নকল করে তৈরী হচ্ছে বেবি লোশন, বেবি স্যাম্পু, জনসন পাউডার, ইউনিলিভারের পন্ডস, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী প্যারাসুট নারিকেল তেল, গ্লিসারীন এ ধরনের নকল প্রসাধনী পণ্য।
ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে তৈরি এসব নকল প্রসাধনী মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল প্রসাধনীর ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগের পাশাপাশি ক্যানসারের মতো ভয়ানক ব্যাধিতে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুল কুদ্দুস দীর্ঘধীন যাবত এ নকল প্রসাধনীর ব্যবসা করে আসছে বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় কাটাখালী থানাধীন কাপাশিয়া বাজারের পাশেও একটি নকল প্রসাধনীর তৈরীর কারখানাও ছিল এই আব্দুল কুদ্দুসের।
সেখানে গোপনে তৈরি হচ্ছিল বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের নকল প্রসাধনী। লোকজনের কাছে এ কারখানার বিষয়ে জানাজানি হলে তা গোপনেই বন্ধ করে দেয় বলে শোনা যায়।
নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক সেখানকার একজন কুদ্দুসের কারখানার কর্মচারী জানান,শ্যামপুর মোড়ে কুদ্দুসের একটি দোকান আছে দোকানটি সব সময় বন্ধ থাকে।
রাতের আধাঁরে দোকান খোলে আবার কিছুক্ষন থেকে মালামাল বের করে দোকান ঘরটি বন্ধ করে দেন।
কারন সেই দোকানেই এ সকল নকল প্রসাধনী পণ্য থাকে। এমনকি দোকানটিতেও রাতের আধারে চলে লেবেল লাগানোর কাজ।
তিনি আরো বলে কয়েকদিন আগেই নগরীর চন্দ্রিমা থানায় কুদ্দুসের একজন এসআর কে নকল প্যারাসুট তেল সহ হাতে নাতে আটক করে পুলিশ। পরে সেখান থেকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পেরন করেন।
তিনি বলেন, ভয়ংকর বিষয় হল- শিশুদের ব্যবহৃত প্রসাধনীও তৈরি করে যা ব্যবহারে শিশুরা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, অধিক মুনাফার আশায় অসাধু চক্র মানুষকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিচ্ছে।
শুভ নামের এক দোকান ব্যবসায়ী বলে, আমার দোকান নগরীর ছোট বনগ্রাম পূর্বপাড়া এলাকায় আমি বহুদিন ধরে দোকানের ব্যবসা করে আসছি। সে এটাও বলেন একজন এসআর তার দোকানে অর্ডার নিতে আসে।
তার কাছে প্যারাসুট নারিকেল তেলে অর্ডার দেন শুভ। পরের দিন সেই এসআর প্যারাসুট তেল দিতেই দেখা যায় সবগুলোই নকল প্যারাসুট তেল গোপনে অরিজিনাল প্যারাসুটের এরিয়া ম্যানেজার কে ফোন করলে তিনি বলে আজ ঔ রুটে কোন অর্ডার কাটা মাল ডেলীভারি নাই।
পরে শুভ কৌশলে থানায় ফোন করলে চন্দ্রিমা থানার এসআই ফারুন সহ সংঙ্গীর্য় অফিসার সেখান গিয়ে তাকে নকল প্রসাধনী সহ হাতে নাতে আটক করে।
সেই এসআর বলেন এগুলা নকল প্যারাসুট তেল তা আমি বলতে পারব না, আমার মালিক বলতে পারবে, সেই এস আররের কাছে মালিকের ঠিকানা জানতে চাইলে, সেই এসআর বলেন আমার মালিকের নাম কুদ্দুস। কাটাখালি শ্যামপুর চার রাস্তার মোড়ে তার দোকান আছে। সেখান থেকেই প্রতিদিন আমাকে মালামাল দেয় বিক্রির জন্য আমি নকলের বিষয়ে কোন কিছুই জানি না।
পরে সেই এসআর কে থানায় নিয়ে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠান বলে জানান শুভ।
এ বিষয়ে জানতে কুদ্দুসের মোবাইলে কল দিয়ে নকল প্রসাধনী তৈরীর বিষয়ে কথা বলতেই তিনি ফোন কেটে বন্ধ করে দেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একাধিক সূত্র জানায়, বিভিন্ন অভিযানেও থেমে নেই নকল পণ্যের বাজার। নকল প্রসাধনীর সবচেয়ে বড় বাজার রাজধানী ঢাকায়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে এসব কারখানায় নকল প্রসাধানী তৈরি করা হয়। প্রিন্টিং প্রেস থেকে বিভিন্ন ধরনের মোড়ক তৈরি করে এনে লেবেল লাগিয়ে নকল পণ্য ভরা হয়। পরে তা ভোক্তাদের কাছে আসল হিসেবে চালিয়ে দেয় এ অসাধু ব্যাক্তি।
এ বিষয়ে জানতে এস আই ফারুকের মুঠোফোনে কল তিনি বলে, কিছুদিন আগে শুভ নামের একজন ব্যবসায়ীর দোকান থেকে নকল পণ্য সহ তালাইমারীর একজন ব্যাক্তিকে আটক করে তিনি। পরে মামলা দিয়া হয়।
কিন্তুু মূল হোতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান