মো. আবু রায়হান চৌধুরী: কুমিল্লার হোমনায় করোনা পরিস্থিতির চলমান লগ ডাউনের মধ্যেও থেমে নেই গরু চুরি। গত কয়েক দিনে উপজেলার ৫ টি এলাকা থেকে ৭টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি গ্রামে হোমনা-মেঘনা (সার্কেল) এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো.ফজলুল করিম এবং হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কায়েস আকন্দের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে চোরাই গরুসহ একজন নারী সহযোগিকে গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ।
থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযানে চোরাই গরু ক্রয় বিক্রয়কারী হিসেবে জনশ্রুত ওই গ্রামের মোতালেব হোসেন প্রকাশ জুলু মিয়া ও জীবন মিয়া নামে দুই সহোদরের বাড়ি থেকে ৭টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ছয় লাখ পঁচাশি হাজার টাকা। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই ভাই পালিয়ে গেলেও জুলু মিয়ার স্ত্রী সহযোগি লিপি আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এঘটনায় চারজন নামীয় এবং অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনের নামের হোমনা থানায় মামলা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত গরুসমূহ পৌরসভার লটিয়া গ্রামের মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে এলাকার চিহ্নিত গরু চোর কামাল মিয়া এবং তাহার সহযোগিদের নিকট হইতে প্রায় অর্ধেক দামে বিভিন্ন সময়ে ক্রয় করে অধিক দামে বিক্রয়ের জন্য নিজের গোয়াল ঘরে রেখেছে মোতালেব হোসেন চৌধুরী প্রকাশ জুলু মিয়া।
এলাকাবাসী জানায়, মোতালেব হোসেন চৌধুরী প্রকাশ জুলু মিয়া একজন পেশাদার চোরাই গরু ক্রয়-বিক্রয়কারী বলে এলাকায় প্রচলিত আছে। সে বহুদিন ধরে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এ ধরনে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানা এলাকাবাসী।
এএসপি মো. ফজলুল করিম বলেন, গতকাল হোমনা উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি গ্রামের একটি বাড়িতে চোরাই গরু আছে এমন একটি সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালাই।
এতে মোতালেব হোসেন প্রকাশ জুলু মিয়ার বাড়ি থেকে ৬টি গরু এবং তার ভাই জীবন মিয়ার বাড়ি থেকে একটি গরু উদ্ধার করি। এদের সহযোগী হিসেবে জুলু মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তারকে আটক করি।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, ৬টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের সহযোগী হিসেবে মোতালেব প্রকাশ জুলু মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তারকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে গরুগুলির মালিকদের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং তারাও তাদের নিজ নিজ গরু সনাক্ত করেছেন। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গরুগুলি মালিকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
মোতালেব হোসেন চৌধুরী এবং জুলু মিয়া এর স্ত্রী লিপি আক্তার (৩০) জানায় উদ্ধারকৃত গরুসমূহ হোমনা এলাকার চিহ্নিত গরু চোর কামাল মিয়া (৪২), পিতা-মৃত আনোয়ার আলী, সাং-লটিয়া এবং তাহার সহযোগীদের নিকট হইতে প্রায় অর্ধেক দামে বিভিন্ন সময়ে ক্রয় করিয়া অধিক দামে বিক্রয়ের জন্য নিজের গোয়ালঘরে রাখিয়াছে। উক্ত মোতালেব হোসেন চৌধুরী একজন অভ্যাসগতভাবে চোরাই গরু ক্রয়-বিক্রয় করে বলিয়া এলাকায় জনশ্রুতি আছে। চোরাই গরু উদ্ধারের পর এলাকার চোরাই গরুর মালিকগন তাহাদের নিজ নিজ গরু সনাক্ত করিয়াছে। এই বিষয়ে হোমনা থানার মামলা নং-০৪, তাং-০৭/০৫/২০২০ইং, ধারা-৩৭৯/৩৮০/৪১১/৪১৩/৪১৪ পেনাল কোড রুজু করা হইয়াছে। মামলাটি এসআই সুনীল চন্দ্র সূত্রধর, মোবাইল-০১৮৬০২৫৩৮২১ তদন্ত করিতেছেন। প্রধান আসামী মোতালেব হোসেন চৌধুরী জুলু মিয়ার সহযোগী তাহার স্ত্রী লিপি আক্তার(৩০) আটক আছে। পলাতক অন্যান্যদেরকে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
