নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কোন প্রকার কার্ড ছাড়াই সকলের মাঝে বিক্রি করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিশ্রুত ১০ টাকা কেজির চাল। অন্যান্য সময়ে এটি শুধুমাত্র কার্ডধারী অসহায়, দরিদ্র মানুষের মাঝে দেয়া হলেও, করোনা পরিস্থিতিতে সকলের মাঝেই এখন তা বিক্রি চলছে।
তবে শুধুমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মধ্যেই নয়, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে গ্রামেও কার্ড ছাড়া অসহায়, খেটে-খাওয়া, দরিদ্রদের মাঝে বিক্রির দাবি উঠেছে।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের দিনমজুর রেজাউল ইসলাম জানান, এতোদিন থেকে বাড়িতে বসে আছি। তাও কেউ এসে পাসে দাঁড়ায়নি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও কিছুই পায়নি। এমনকি ১০ টাকা কেজির চালেরও কার্ড নাই। এখন যদি এটা কার্ড ছাড়ায় চালগুলো দিতো, তাহলে খুবই ভালো হতো।
গোবরাতলা ইউনিয়নের একজন রিকশাচালক জানান, করোনার মধ্যে দুইদিন বের হয়েছিলাম, দুদিনই পুলিশ রিকশার হাওয়া ছেড়ে বাইরে না যেতে সাবধান করেছে। ১৫ দিন ধরে ঘরে বসে আছি রিকশা নিয়ে বের হতে পারছি না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাত্র ৫ কেজি চাল পেয়েছি। চারজন সদস্যের পরিবারে এটা দিয়ে কি হয়? ফ্রী তে না পাইলেও ১০ কেজির চালগুলো পেলেও অনেক উপকার হতো।
দিনমজুর নুরুল জানান, কোনদিন ১০ কেজির চালগুলো পায় না। এখন যদি অন্তত পায়, তাও অনেক ভালে হয়৷ কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না, ইনকাম না থাকলে খাবো কি?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সরকারিভাবে স্বাভাবিক সময়ে ১০ কেজির যে চাল বিক্রি করা হয়, তা ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রায় ৫০-৭০টি পরিবার পেয়ে থাকে।
করোনার ভয়াবহ থাবা থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, অসহায় দরিদ্র পরিবারগুলোকে বাঁচাতে তাই পৌরসভার পাশাপাশি গ্রামের মানুষের মাঝেও এটি বিক্রির প্রয়োজন বলে মনে করছেন সমাজের সূধী মহল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসেন জানান, পৌর এলাকার মত ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্ড ছাড়া ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রির চিন্তাভাবনা সরকারের আছে। পরবর্তী নির্দেশনা পেলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।