কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান -এসিল্যান্ডসহ সেই ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ- ২,কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে তৃতীয় দিনের নমুনার অধিকতর পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। উঠছে আবাসস্থল হতে লকডাউন।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল আরেফীন, কুমারখালীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাইমিন আল জিহানসহ ৬৭ জনের সংক্রামণ শনাক্তের অধিকতর পরীক্ষার ফল বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে পাওয়া গেছে। এতে দুজনের নমুনা পজিটিভ বলে শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া দুজনের বাড়ি মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায়। ঢাকার ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথে (আইপিএইচ) কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে পাঠানো ৬৭টি নমুনা অধিকতর পরীক্ষা শেষে এ ফল জানানো হলো। গত ২৬ এপ্রিল মিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামারুল আরেফীন এবং কুমারখালীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অসুস্থ্য বোধ করলে তাদের নমুনা গ্রহণ করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের ফলাফল আসে করোনা পজিটিভ এর প্রেক্ষিতে আরও অধিকতর টেস্টের পারমার্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার জানান, ‘রাত সাড়ে ৮টায় ৬৭ জনের প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এরমধ্যে দুজনের নমুনায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। একজনের বয়স (৩৫) বাড়ি মেহেরপুর, আরেকজনের বয়স (১৩) চুয়াডাঙ্গায়।
সোমবার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে তৃতীয় দিনের পরীক্ষায় বৃহত্তর কুষ্টিয়া (কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা) ১৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৭ জনের করোনা পজেটিভ আসে। পজেটিভের তালিকায় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামারুল আরেফীন, কুমারখালী সহকারী কমিশনার’র (ভূমি) নাম ছিল। বিষয়টি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে যান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে ওই রাতেই প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রত্যেকে বাড়িতে গিয়ে লকডাইন করে দেন। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ১৮ জন, চুয়াডাঙ্গার ২৮ জন ও মেহেরপুরের ২১ জন। এ নিয়ে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবের ল্যাব প্রধান ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমীন রহমান বলেছিলেন, ‘৬৭ জনকে যে পজিটিভ বলা হচ্ছে তার মধ্যে একটা ক্লিয়ারলি পজিটিভ ছিলো, ৬৬টা ইনকনক্লুসিভ মানে ডিসিশন (সিদ্ধান্ত) নিতে পারিনি এমনই ছিলো।’ সিদ্ধান্ত না নিতে পারার কারণ কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, সেগুলো নেগেটিভ না পজিটিভ কি না সেটা একই স্যাম্পুল দ্বিতীয়বার টেস্ট করে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। এটা এখানেও (কুষ্টিয়া) করা যেতো। যেহেতু এটা নতুন ল্যাব তাই অধিকতর নিশ্চিত হতে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নমুনাগুলো পজিটিভের কাছাকাছি ছিলো।
ল্যাব সূত্র জানায়, নমুনা সংগ্রহ বা ল্যাবে নমুনাগুলো প্রসেস করায় কোনো সমস্যা ছিলো না। নতুন ল্যাব হিসাবে বুঝে উঠতে একটু সময় লাগছে। তবে এখন ঠিক হয়ে যাবে। একেবারে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আর কোনো রিপোর্ট দেওয়া হবে না। এদিকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ৬৭ জনের আবাসস্থল তিন জেলার প্রশাসন থেকে লকডাউন করা হয়। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, চুড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।